আদালতপ্রাঙ্গণে আইনজীবী হত্যা
চিন্ময় ইস্যুতে উত্তেজনা সংঘর্ষ, ঢাকার তিন এলাকা ও চট্টগ্রামে বিজিবি মোতায়েন, চিন্ময় গ্রেপ্তারে ভারতের উদ্বেগ
চট্টগ্রামে আদালতপ্রাঙ্গণে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের অনুসারীদের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় তাকে হত্যা করা হয়। চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে (৩৮) গতকাল বেলা ১১টায় রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে দায়ের করা একটি মামলায় চট্টগ্রামের আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় তাঁর জামিন আবেদন করলে তা নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। সূত্র জানান, শুধু রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ নয়, ২০২৩ সালের জুনে শিশুদের ওপর যৌন নির্যাতনের অভিযোগে ‘ইসকন’ আন্তর্জাতিক শিশু সুরক্ষা অফিসের পরিচালক কমলেশ কৃষ্ণ দাস স্বাক্ষরিত একটি বিবৃতিতে চিন্ময় কৃষ্ণ ব্রহ্মচারীকে মন্দির এবং ধর্মীয় উপাসনালয়ের সব ধরনের কর্মকা থেকে বিরত রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে এসব ধর্মীয় উপাসনালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া ইসকনের স্থাপনায় রাতযাপনের অনুমতি এবং ১৮ বছরের নিচের বয়সের কোনো ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করতে না দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তার কেন্দ্র করে বিভিন্ন স্থানে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ অবস্থায় ঢাকার তিন এলাকা ও চট্টগ্রামে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। চিন্ময়ের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেছে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট।
আদালতপ্রাঙ্গণে আইনজীবীর মৃত্যুর বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দীন। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম আদালতে সংঘর্ষের ঘটনায় হতাহত ছয়-সাত জনকে চমেক হাসপাতালে আনা হয়। এর মধ্যে একজনকে মৃত অবস্থায় আনা হয়। একাধিক সূত্রের অভিযোগ, গতকাল বিকাল ৪টার দিকে সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে কারাগারে পাঠানোর সময় এ হত্যাকা সংঘটিত হয়। এ হত্যার জন্য তাঁর সমর্থকরা দায়ী। আহতের সংখ্যা ২০-এর মতো। নিহত সাইফুল ইসলামের গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি। তাঁর বাবার নাম জালাল উদ্দিন।
তাঁকে হত্যার পর চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির সভাপতি নাজিম উদ্দিন চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, বিক্ষোভকারীরা এক আইনজীবীকে চেম্বারের নিচ থেকে ধরে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছেন। নিহত আইনজীবীর নাম সাইফুল ইসলাম ওরফে আলিফ (৩৫)। তিনি সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি)।
চমেক হাসপাতাল, পুলিশ ও আদালতসূত্রে জানা যায়, আইনজীবী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও পুণ্ডরিক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। গতকাল চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরিফুল ইসলামের আদালত এ আদেশ দেন। চিন্ময়ের মুক্তির দাবিতে আদালত এলাকায় ব্যাপক বিক্ষোভ দেখিয়েছেন সনাতনী সম্প্রদায়ের লোকজন। তারা চিন্ময়ের মুক্তির দাবিতে তাকে বহনকারী প্রিজনভ্যান আটকে প্রায় তিন ঘণ্টা