আশাশুনি

বুধহাটায় অজ্ঞাত অসুস্থ ব্যক্তির ঝড়-বৃষ্টিতে খোলাস্থানে অমানবিক বসবাস

জি এম মুজিবুর রহমান, আশাশুনি

সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার বুধহাটায় অজ্ঞাতনামা প্যারালাইজড বৃদ্ধ খোলা আকাশের নীচে ঝড়বৃষ্টিতে অমানবিক ভাবে দিনরাত যাপন করছে। অসহায় ব্যক্তির মানবেতর জীবন যাপন কতটা কষ্টকর তা বলা কঠিন। প্রশাসন ও জন কল্যানের সাথে জড়িত প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিতে জোর দাবী জানান হয়েছে।
এলাকাবাসী জানান, প্রায় এক বছর পূর্বে অনুমান ৭০ বছর বয়সী বৃদ্ধটি বুধহাটায় আগমন করে। তার মুখে কথা শোনা যায়না। হা-হু করা ছাড়া কিছুই বলতে শোনা যায়না। হাটতে চলতে অপারগ বৃদ্ধটি বুধহাটা ইউনিয়ন পরিষদের নীচেন বা সামনে খোলা স্থানে দিনরাত থাকতো তখন। পায়খানা প্রস্রাব করে রাখায় পরিবেশ নষ্ট হওয়ার কারণ দেখিয়ে স্থানীয়রা তাকে পরিষদ থেকে রাস্তায় বের করে দেয়। সেই থেকে রাস্তার উপরে, কখনো রাস্তার পাশে, সবশেষে ব্র্যাক অফিসের পাশে নির্মানাধীন বাড়ির সামনে খোলা স্থানে থাকতে শুরু করে। পাশের বা পথচারীরা তার খাবার ব্যবস্থা করলেও রৌদ্র-বৃষ্টি-ঝড় ও ঠান্ডার মধ্যে খোলা আকাশের নীচে খুবই কষ্টকর ও অমানবিক ভাবে চলে তার দুখী জীবন।
সম্প্রতি একটানা বৃষ্টিপাতে রাতদিন ভিজে নাজুক পরিস্থিতির শিকার হলে বুধহাটা আঞ্চলিক প্রেস ক্লাবের কোষাধ্যক্ষ বাবুল হোসেন বৃদ্ধার করুন পরিনতি দেখে তাকে উঠিয়ে নিয়ে তার বাড়ির সামনে ছায়াযুক্ত স্থানে নিয়ে অস্থায়ীভাবে থাকার ব্যবস্থা করেছেন। কাপড়-চোপড় ও খাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। এটি তার নিরাপত্তার জন্য যথেষ্ট নয়। তাকে নিরাপদ স্থানে নেওয়া ও থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে প্রশাসন ও জন কল্যানে কাজ করা ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের এগিয়ে আসার জন্য জোর দাবী জানান হয়েছে।
সাংবাদিক বাবুল হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যরাতে সে তার ঘরের পাশ থেকে রাস্তায় উঠেগিয়েছিল। অন্ধকারের মধ্যে এক বাই সাইকেল চালক তার উপর সাইকেল তুলে দিলে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। পরে এক ইঞ্জিন ভ্যান চালক হঠাৎ করে তাকে রাস্তার উপর দেখতে পেয়ে বাঁচাতে গিয়ে যাত্রীসহ রাস্তার পাশে গাছের সাথে দুর্ঘটনা কবলিত হলে যাত্রীরা আহত হয়।
এব্যাপারে বুধহাটা ইউপি চেয়ারম্যান সহকারী অধ্যাপক মাহবুবুল হক ডাবলু জানান, তাকে পরিষদের নীচে থাকতে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু সে ইচ্ছামত বাইরে চলে যাওয়ায় কিছু করা যায়নি। পাশের এক মহিলার মাধ্যমে তার খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার মোঃ রফিকুল ইসলাম জানান, পাগলের জন্য কোন কিছু করার সুযোগ সমাজ সেবা অফিসের নেই।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button