বিগত ২০০৬ সালে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের লগি-বৈঠার তান্ডব সৃষ্টি করে জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীদের হত্যার বিচার দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, আমরা এদেশে স্বাধীনতা পেয়েছিলাম কিন্তু তার সুফল পাইনি। পতাকা পেয়েছিলাম কিন্তু পতাকার ঘ্রাণ নিতে পারিনি। বাংলার মানচিত্রকে বিদেশি শক্তি দিয়ে এমন ভাবে চাপে রাখা হয়েছিল দেশের মানুষের কোন স্বাধীনতা ছিল না। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর ঢাকার বাইতুল মোকারমের উত্তর গেটে জামায়াতের সমাবেশে হামলা করে আওয়ামী লীগ। সেদিনের পল্টন ট্রাজেডি ইসলামি আন্দোলনের নেতা কর্মীরা শহীদ হয়েছিলেন। আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা লগি বৈঠা দিয়ে মানুষ হত্যা করে সেখানে লাশের উপর নৃত্য করে। তারা ছিল মানবতার ও গণতন্ত্র বিরোধী। মুখে বলেছে এক কাজে আর এক। তারা মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছিল। দিনের ভোট রাতে করে নিয়ে ক্ষমতায় এসে গণহত্যায় লিপ্ত হয়। তারা দেখিয়েছে ভোটার বিহীন ভোট ব্যবস্থা। শাপলা চত্বরে হেফাজত ইসলামের নেতা-কর্মীদের পাখির মত গুলি করে হত্যা করেছিল। সেদিন মিডিয়ার মুখ চেপে ধরেছিল। যাতে সত্য প্রকাশ না হয়। তারা এদেশের মানুষকে মিথ্যা, গায়েবি মামলা দিয়ে গুম, খুন করেছে। মানুষকে আয়না ঘরে আটকে রেখে অমানসিক নির্যাতন করে লাশ গুমের ঘটনাও ঘটিয়েছে। বিচার বিভাগে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে মানুষের ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত করেছে। সেদিন নির্বিচারে সেনা অফিসারদের হত্যা করে দেশকে নিরাপত্তাহীনতার দিকে ঠেলে দিয়েছিল। পুলিশ বাহিনীকে লীগ বাহিনীতে পরিণত করেছিল। দেশের টাকা লুটপাট করে বিদেশে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন তারা। তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার সুযোগ ছিল না কারোর। কিন্তু ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ব্যাপক গণহত্যা করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চেয়েছিল। কিন্তু ছাত্রদের আন্দোলনের মুখে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয় স্বৈরাচার, ফ্যাসিস্ট সরকার। বাংলাদেশ জামায়াত ইসলাম ক্ষমতায় এলে দেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করবে। বেকারদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে কাজ করবে। অন্য ধর্মের মানুষের নিরাপত্তা দিতে এবং সব ধর্মের অনুষ্ঠান স্বাধীন ভাবে পালন করার সুযোগ সৃষ্টি করবে। বিশেষ করে বিগত দুর্গাপূজায় জামায়াত-শিবির হিন্দুদের মন্দির পাহারা থেকে শুরু করে তাদের নিরাপত্তায় কাজ করেছে। এ কাজ করতে যেয়েও সমালোচনায় পড়তে হয়েছে দলটির। ইতিপূর্বে আমাদের তথ্য সন্ত্রাসের মাধ্যমে মানুষের কাছে জামায়াত ইসলামকে নানা দোষে দোষী করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলাম ন্যায়নীতি, ইনসাফের ভিত্তিতে কাজ করে। কোন অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয় না। মন্দির বা প্রতিমা ভাঙতে উৎসাহিত করে না। আগামী নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে সেজন্য বর্তমান অন্তবর্তী সরকার কাজ করছে। আমরা দিনের ভোট আর রাতের হতে দিব না। জনগণের ভোটাধিকার ফিরে পাবে। আগামী বাংলাদেশ হবে বৈষম্যমুক্ত সাম্যের বাংলাদেশ। তাই সকলের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার বিকল্প নেই। সোমবার (২৮ অক্টোবর) বিকাল ৩ টায় উপজেলা জামায়াতের আয়োজনে পারুলিয়া বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন জামায়াত অফিস চত্বরে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের লগি-বৈঠার তান্ডব সৃষ্টিকারীদের বিচার দাবীতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বক্তারা। বিক্ষোভ সমাবেশে
উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা অলিউল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারী আলহাজ্ব মাহাবুবুল আলম। উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারী মাওলানা এইচ এম ইমদাদুল হকের পরিচালনায় বক্তব্য দেন জেলার জামায়াতের কর্মপরিষদের অন্যতম সদস্য মোস্তফা আসাদুজ্জামান মুকুল, জেলা ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন, উপজেলা জামাতের অন্যতম সদস্য মাওলানা আব্দুল ওয়াহেদ, ইসরাইল আশেকে মাকফুর, দেলোয়ার হোসেন, শামসুল আরিফ, জিয়াউর রহমান জিয়া, সাবেক সখিপুর ইউপি চেয়ারম্যান মঈনউদ্দীন ময়না, সাবেক নওয়াপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক তরফদার, জামায়াতের মিডিয়া বিভাগের সভাপতি রাজু আহম্মেদ, কুলিয়া ইউনিয়ন আমীর মাওলানা আনারুল ইসলাম, পারুলিয়া ইউনিয়ন আমীর (ভারপ্রাপ্ত) মাওলানা আবু ইউসুফ, সখিপুর ইউনিয়ন আমীর মাওলানা ইয়াকুব আলী সরদার, নওয়াপাড়া ইউনিয়ন আমীর ইঞ্জিনিয়ার মাহাবুব আলম, দেবহাটা উপজেলা শিবিরের উত্তর শাখার সভাপতি রোকনুজ্জামান প্রমুখ। উপস্থিত ছিলেন সাবেক পারুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ, উপজেলা নায়েবী আমীর মহিউদ্দীন মাহমুদ, দেবহাটা ইউনিয়ন আমীর আবুল হোসেন, উপজেলা ইউনিট সদস্য সোলাইমান হোসেন, দেবহাটা দক্ষিণ শাখা ছাত্র শিবিরের সভাপতি আশিকুজ্জামান সহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। পরে ২৮ অক্টোবর ঢাকার বাইতুল মোকারমের উত্তর গেটে আওয়ামী লীগের লগি বৈঠার তান্ডবের আলোকচিত্র প্রদর্শনী করা হয়।