ফ্যাসিস্ট বিদায় করে যাতে ফ্যাসিস্ট প্রতিষ্ঠিত না হয় সেদিকে সজাগ থাকতে হবে
সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে খ্যাতিমান সাংবাদিক সাহেদ আলম
খ্যাতিমান সাংবাদিক, জনপ্রিয় রাজনৈতিক বিশে¬ষক, নির্যাতিত সাংবাদিক শাহেদ আলম বলেছেন, ফ্যাসিস্ট বিদায় করে যাতে আর কখনও ফ্যাসিস্ট প্রতিষ্ঠিত না হয় সেজন্য আমাদেরকে সজাগ থাকতে হবে। এ লক্ষে বর্তমান সরকার বিভিন্ন প্রয়োজনীয় সংস্কারের কাজ করে যাচ্ছে। রাজনীতির সকল স্টেকহোল্ডারদের সাথে আলাপ-আলোচনা করে সরস্কারগুলি স্থায়ী রূপ দিতে না পারলে আমাদের সকল অর্জন ¤øান হয়ে যাবে। কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করা কখনও বুদ্ধিমানের কাজ হতে পারেনা। তারা কোনো না কোনো সময় পূর্ণ শক্তি নিয়ে ফিরে আসে। তিনি বলেন, আমি নির্যাতিত হয়েছি বলে কখনই চাইবোনা ভবিষ্যতে আমার মত আর কেউ নির্যাতিত হয়ে দেশ ছাড়–ক। কেবল বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার কারনে আমাকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে। আর দেশের বাইরে থাকায় আমি আমার বাবার মৃত্যুর পরও তার মৃতদেহ ছুয়ে দেখতে পারেনি। জানাজার নামাজে অংশ নিতে পারেনি। তাই দীর্ঘ নয় বছর পর দেশে ফিরে আমি সর্বপ্রথম আমার বাবার কবরের কাছে এসেছি। এমন সময় যেনো কারও জীবনে আর না আসে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি আনম আবু সাঈদ এর সভাপতিত্বে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, আমাদের সময় ও মাছরাঙা টেলিভিশনের নিজস্ব প্রতিবেদক মোস্তাফিজুর রহমান উজ্জল এর সঞ্চালনায় শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল বারী, দক্ষিণের মশালের সম্পাদক আশেক-ই-এলাহী, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস, প্রেসক্লাবের অর্থ সম্পাদক শেখ মাসুদ হোসেন, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশন ও আজকের পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি আবুল কাশেম, বাংলাদেশ প্রতিদিনের মনিরুল ইসলাম মনি, সাতক্ষীরা কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরি’র সম্পাদক মো. কামরুজ্জামান রাসেল, প্রেসক্লাবের নির্বাহী সদস্য গোলাম সরোয়ার, নির্বাহী সদস্য মুহা: জিল্লুর রহমান, নির্বাহী সদস্য আক্তারুজ্জামান বাচ্চু, নির্বাহী সদস্য আমিরুজ্জামান বাবু, ইব্রাহিম খলিল প্রমুখ।
বিবিসি, এনটিভি, মাছরাঙা টেলিভিশন, চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের এক সময়ের সাড়া জাগানো সাহসী সাংবাদিক সাতক্ষীরার কৃতি সন্তান সাহেদ আলম আরও বলেন, ড. ইউনুসের মত একজন বিশ্ববরেণ্য মানুষ এই সরকারের প্রধান বলেই অনেকে এদেশে হাত দিতে সাহস পাচ্ছেনা। তা না হলে প্রতিবেশী দেশ এই বিপ¬ব ছিনিয়ে নিত। এই আন্দোলনের পিছন থেকে অনেকে কাজ করেছেন উলে¬খ করে সাহেদ আলম বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী মানুষের উপলব্ধি বুঝতে পেরে জনতার কাতারে শামিল হয়েছিল। তানা হলে আমাদের বিপ¬বে আরও মুল্য দিতে হত। তিনি বলেন এখান থেকে আমাদের ফিরে আসার কোনো সুযোগ ছিলনা। বর্তমান সরকারের বিভিন্ন সফলতার কথা উলে¬খ করে সাহেদ আলম বলেন, দূগা পুজা নিয়ে অনেক শঙ্কা থাকলেও তা অত্যন্ত নির্বিঘœ ও শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে। সরকার অর্থনীতি কর্মকান্ড খুবই সফলতার সাথে গতিশীল করেছে। ফ্যাসিস্টদের রেখে যাওয়া ঋনের কিস্তিও পরিশোধ করছে। বিভিন্ন বিষয় সরকারের উদ্যোগ চোখে পড়ার মত।
তিনি আরও বলেন, আমাদের সতর্কভাবে সরকারকে সময় দিতে হবে। একটি যৌতিক সময় পর নির্বাচনও দিতে হবে। বিপ¬বোত্তর সরকারের সাংবিধানিক বৈধতা না থাকলেও জনআকাঙ্খার ম্যান্ডেটই তাদের বৈধতা। তিনি বলেন, সরকারের পাশে জনগন রয়েছে বলেই তারা দায়িত্ব পালন করতে পারছে। তবে সরকারের প্রতি আমাদের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি না থাকলে ফ্যাসিস্টরা আবারও আমাদের ওপর চেপে বসতে পারে। এজন্য দেশের সকলকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে অনুরোধ জানান তিনি। অনুষ্ঠানে তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন এবং বিগত সরকারের বিভিন্ন দূর্ণীতি ও অনিয়ম নিয়ে নিজের অবস্থান তুলে ধরেন। এবং কীভাবে এই বিপ¬ব তৈরী হল তার প্রেক্ষাপট বর্ণনা করেন। অনুষ্ঠানে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে তাকে শুভেচ্ছা স্মারক উপহার দেয়া হয়। এসময় সাতক্ষীরায় কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিক, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও সাংবাদিক সাহেদ আলমের বেশ কয়েকজন বন্ধু উপস্থিত ছিলেন।