কালাগাছিয়া ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৫,২৬৬ জন পর্যটক ভ্রমণ


নিউজ ডেস্ক প্রকাশের সময় : ফেব্রুয়ারী ১৭, ২০২৫, ৬:১৯ অপরাহ্ন /
কালাগাছিয়া ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৫,২৬৬ জন পর্যটক ভ্রমণ

সাতক্ষীরার পশ্চিম সুন্দরবনের কালাগাছিয়া ইকোট্যুরিজম কেন্দ্র এখন পর্যটকদের ভিড়ে মুখর। শীতের শেষে বসন্তের আগমনী বার্তা নিয়ে প্রকৃতি নতুন রূপে সেজেছে, আর সেই মোহময় সৌন্দর্য উপভোগ করতেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকরা ছুটে আসছেন। এখানে ঘন সবুজ বন, বন্যপ্রাণী, নদী আর নৈসর্গিক পরিবেশ মিলিয়ে প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য এক অনন্য অভিজ্ঞতা অপেক্ষা করছে।

সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগের সাতক্ষীরা রেঞ্জের হিসাব অনুযায়ী, ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৫,২৬৬ জন পর্যটক এই অঞ্চলে ভ্রমণ করেছেন। বিশেষ করে, সপ্তাহের শেষের দিকে এবং সরকারি ছুটির দিনে পর্যটকদের ভিড় লক্ষণীয়ভাবে বেড়ে যায়।

তবে পর্যাপ্ত অবকাঠামোগত উন্নয়ন না থাকায় কিছু সমস্যাও রয়ে গেছে। কুষ্টিয়া থেকে আসা পর্যটক হাসান মাহমুদ বলেন, সুন্দরবনের সৌন্দর্য অবর্ণনীয়। এত কাছ থেকে প্রকৃতিকে উপভোগ করার অনুভূতি অসাধারণ। তবে সাতক্ষীরা থেকে সুন্দরবন পর্যন্ত সড়কের অবস্থা খুবই খারাপ। আমাদের অঞ্চল থেকে সচরাচর কেউ সাতক্ষীরা হয়ে সুন্দরবন ভ্রমণে যেতে চান না। সরকারের উচিত দ্রুত এই সড়কটির সংস্কার করা।

এদিকে, খুলনা থেকে আসা পর্যটক রোকেয়া সুলতানা বলেন, আমরা পরিবারসহ এসেছি, বাচ্চারাও খুব আনন্দ পাচ্ছে। তবে কিছু জায়গায় বর্জ্য পড়ে থাকতে দেখা গেছে। কর্তৃপক্ষ ও দর্শনার্থীদের একসঙ্গে পরিবেশ পরিষ্কার রাখার বিষয়ে সচেতন হতে হবে।

কালাগাছিয়া ইকোট্যুরিজম কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শিবেন মজুমদার বলেন, সাতক্ষীরা রেঞ্জের বুড়িগোয়ালিনী, মুন্সিগঞ্জ ও কদমতলা—এই তিনটি ফরেস্ট স্টেশন থেকে পর্যটকদের সুন্দরবন ভ্রমণের অনুমতিপত্র দেওয়া হয়। প্রতিদিন প্রচুর পর্যটক আসছেন, যা পর্যটন শিল্পের জন্য ইতিবাচক দিক। তবে বন সুরক্ষার বিষয়েও আমরা কঠোর নজরদারি রাখছি। কেউ অবৈধভাবে প্রবেশ করলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং রাজস্ব আদায় করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

উপকূলীয় সুন্দরবন প্রেসক্লাবের সভাপতি বেলাল হোসেন বলেন, সুন্দরবনে দুই-তিন দিন বা রাত্রিকালীন অবস্থানের প্রয়োজন হলে সাতক্ষীরা রেঞ্জ অফিসের সে ক্ষমতা নেই। ফলে পর্যটকদের খুলনা গিয়ে অনুমতি নিতে হয়, যা তাদের জন্য বড় বিড়ম্বনা। যদি এখানে রাত্রিকালীন পারমিট চালু করা হয়, তবে এ অঞ্চলে পর্যটকের সংখ্যা অনেক বেড়ে যাবে।

তিনি আরও বলেন, রাস্তাঘাট সংস্কারের অভাব ও টুরিস্ট বোর্ডের ভাড়া বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন কারণে এই অঞ্চলে পর্যটক কমেছে। তবে পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে হলে সাতক্ষীরা থেকে মুন্সীগঞ্জ পর্যন্ত প্রধান সড়কগুলোর সংস্কার খুবই জরুরি।

পর্যটকদের এই আগমন প্রমাণ করে, সঠিক পরিকল্পনা ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলে এ অঞ্চলে পর্যটন শিল্প আরও প্রসার ঘটবে। সড়ক উন্নয়ন, আবাসন সুবিধা বৃদ্ধি এবং পরিবেশ সংরক্ষণে পর্যাপ্ত উদ্যোগ নিলে সুন্দরবন আরও জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্রে পরিণত হবে।