অর্থনী‌তিসর্বশেষ খবর

জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে, গ্রীষ্মকালে চাহিদা বৃদ্ধির প্রভাব

সোমবার সকালে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কিছুটা বেড়েছে। মূলত পশ্চিমের গ্রীষ্ম মৌসুমে তেলের চাহিদা বেড়ে গিয়ে সরবরাহ হ্রাসের যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তার ধাক্কায় আজ তেলের দাম বেড়েছে। সেই সঙ্গে জানানো হয়েছে, ওপেক ও সহযোগী দেশগুলো বছরের তৃতীয় প্রান্তিকেও উৎপাদন হ্রাসের ধারা অব্যাহত রাখবে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, একদিক থেকে সরবরাহ হ্রাসের চাপ থাকলেও আরেক দিকে সরবরাহ বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সঙ্গে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির প্রভাবও বাজারে আছে। ওপেক ও সহযোগী দেশগুলো তেল উৎপাদন হ্রাস করলেও অন্যান্য দেশ তেল উৎপাদন বাড়াবে। ফলে সামগ্রিকভাবে তেলের দাম খুব একটা বাড়ছে না।

আজ সোমবার সকালে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি ৩৩ সেন্ট বা শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ বেড়ে ৮৫ দশমিক ৩৩ ডলারে উন্নীত হয়েছে। সেই সঙ্গে ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের দাম ব্যারেলপ্রতি ৩২ সেন্ট বা শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৮১ দশমিক ৮৬ ডলারে উঠেছে।

সংবাদে বলা হয়েছে, সামগ্রিকভাবে জুন মাসে এই উভয় ধরনের জ্বালানি তেলের দাম প্রায় ৬ শতাংশ বেড়েছে। দুই সপ্তাহ ধরে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি ৮৫ ডলারের ওপরে। মূলত ওপেক ও সহযোগী দেশগুলোর তেল উৎপাদন হ্রাসের ধারা চলতি বছরেও অব্যাহত থাকায় তেলের দাম বাড়তি।

এর সঙ্গে যোগ হয়েছে পশ্চিমা দুনিয়ায় গ্রীষ্মকালে তেলের বাড়তি চাহিদার সম্ভাবনা। এই সময় যুক্তরাষ্ট্রের অনেক মানুষ দেশময় ঘুরে বেড়ান। ফলে তেলের চাহিদা অনেকটা বেড়ে যায়। এ ছাড়া গরমের সময় শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের চাহিদাও বাড়ে। এই পরিস্থিতিতে বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, চলতি গ্রীষ্মকালে পশ্চিমা বিশ্বে তেলের চাহিদা বেড়ে সরবরাহ ঘাটতি সৃষ্টি হবে।

এদিকে গত শুক্রবার এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (ইআইএ) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পণ্যের জন্য তেলের উৎপাদন ও চাহিদা এখন গত চার মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে এর ভূমিকা আছে।

বিশ্লেষকেরা ব্রেন্ট ক্রুডের চাহিদার বিষয়ে আশাবাদী, যদিও যুক্তরাষ্ট্রে গ্যাসোলিনের ও সামগ্রিকভাবে চীনের চাহিদা নিয়ে একধরনের শঙ্কা আছে। চীনের চাহিদা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, তারাই এখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় তেল আমদানিকারী দেশ।

বিশ্লেষকেরা আরও বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ সেপ্টেম্বর মাসে নীতি সুদহার কমাবে। পাশাপাশি বিশ্বে চলছে ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা। তবে এরপরও তেলের দাম খুব একটা বাড়ছে না।

কোভিড মহামারির সময় তেলের দাম অনেক কমে গেলেও ২০২১ সালের মধ্যভাগ থেকে দাম বাড়তে শুরু করে। এরপর ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১০০ ডলার ছাড়িয়ে যায়। তবে এরপরই আবার তেলের দাম কমতে শুরু করে। ২০২২ সালের শেষ দিক থেকে ওপেক ও সহযোগী দেশগুলো তেলের সরবরাহ কমিয়ে মূল্যবৃদ্ধির চেষ্টা করে। সেই ধারা এখনো অব্যাহত রয়েছে।

এদিকে আমেরিকা মহাদেশে একটি শক্তিশালী হারিকেন আঘাত হানতে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে বাজার এই ঝড়ের দিকেও তাকিয়ে আছে; স্বল্প মেয়াদে তেলের বাজারে ঝড়ের প্রভাব পড়তে পারে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button