অর্থনী‌তিআশাশুনিসাতক্ষীরা

আশাশুনিতে ৪৭৫ হেক্টর রোপা আমন ও ৮৫ হেক্টর সবজি ক্ষেত পানিতে ছয়লাপ

জি এম মুজিবুর রহমান, আশাশুনি

অতিবৃষ্টি ও পার্শবর্তী উপজেলার পানির চাপে আশাশুনি উপজেলার কৃষকদের ফসলের ক্ষেত ছয়লাপ হয়ে গেছে। এপর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে কমপক্ষে ৪৭৫ হেক্টর জমির রোপা আমন ধানের ক্ষেত এবং ৮৫ হেক্টর জমিতে সবজী ক্ষেত নিমজ্জিত হয়ে ফসল নষ্ট হয়ে গেছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানাগেছে, চলতি মৌসুমে আশাশুনি উপজেলার ১১ ইউনিয়নে ৯ হাজার ৫৬০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের চাষাবাদ করেন কৃষকরা। এছাড়া ৫৩০ হেক্টর জমিতে সবজী চাষাবাদ করা হয়। ফসলের ক্ষেত বেশ সুন্দর ও অনুকুল পরিবেশে ভরে উঠছিল। অভাগা অতি বৃষ্টিপাত ও শেষের দিকে এসে বৃষ্টিপাতের পাশাপাশি ভিন্ন উপজেলা থেকে নদী ভাঙ্গন ও বৃষ্টির পানি আশাশুনির কিছু ইউনিয়নকে নাজুক করে ফেলেছে। পানির চাপে ধান ক্ষেত ও সবজী ক্ষেত তলিয়ে গিয়ে একাকার হয়ে যাওতায় ধান ও সবজী ক্ষেতের ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ও গেছে।
উপজেলার কাদাকাটি ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশী ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ ইউনিয়নে ৩৭০ হেক্টর জমির ধান নিমজ্জিত হয়েছে। এছাড়া বুধহাটা ইউনিয়নে ২০ হেক্টর, খাজরা ইউনিয়নে ৩৫ হেক্টর, দরগাহপুর ইউনিয়নে ৩৯ হেক্টর ও কুল্যা ইউনিয়নে ৪০ হেক্টর জমির ধান ফসল নষ্ট হয়েছে। প্রাথমিক হিসাবে ধারনা করা হচ্ছে এসব ক্ষেতে প্রায় ৫৭ হাজার মন বা ২২৮০ মে.টন ধান উৎপাদন হতো। যার বাজার মূল্য প্রায় ৬ কোটি ৩৮ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা।
অপরদিকে আশাশুনি উপজেলার এ মৌসুমে ৫৩০ হেক্টর জমিতে সবজী আবাদ হয়েছে। বৃষ্টির পানির চাপে ইতিমধ্যে ৮৫ হেক্টর জমির সবজী বিনষ্ট হয়েগেছে। যার মধ্যে দরগাহপুর ইউনিয়নে ৫ হেক্টর, খাজরা ইউনিয়নে ৫ হেক্টর, কাদাকাটি ইউনিয়নে ১৩ হেক্টর ও বুধহাটা ইউনিয়নে ১০ হেক্টরসহ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ৮৫ হেক্টর জমির সবজী বিনষ্ট হয়েছে। এঅবস্থা চলতে থাকলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বেড়ে যেতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ এস এম এনামুল ইসলাম জানান, প্রনোদনা পুনর্বাসনের মাধ্যমে ক্ষতির শিকার কৃষকদের বাছাই করে বিনামূল্যে বীজ ও সার সরবরাহ করা হলে ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া যাবে। আমরা ইতিমধ্যে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে চাহিদার কথা জানিয়ে পত্র পাঠানো হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার কৃষ্ণা রায় জানান, পানি নিস্কাশনের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে কথা বলে স্লুইচ হেটগুলো সচল করা হয়েছে। যদিও তা পর্যাপ্ত নয়। ফসল বিনষ্টের ব্যাপারে কিছু করতে হলে পানি কমা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। পানি কমে গেলে কৃষি বিভাগের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button