১৫ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ২৮শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ সোমবারগ্রীষ্মকাল আশাশুনি উপজেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতির বিরুদ্ধে নিষিদ্ধ ঘোষিত পাঞ্জেরী গাইড পাঠ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার অভিযোগ - বর্তমান সাতক্ষীরা
আশাশুনি

আশাশুনি উপজেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতির বিরুদ্ধে নিষিদ্ধ ঘোষিত পাঞ্জেরী গাইড পাঠ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার অভিযোগ

ওমর ফারুক বিপ্লব 

 সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশ অমান্য করে নিষিদ্ধ পাঞ্জেরী গাইড অন্তর্ভুক্ত করার অভিযোগ উঠছে। অভিভাবকদের অভিযোগ আশাশুনি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি কুন্দুড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক মোঃ আরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে। আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিগত ১৩ই জানুয়ারী স্মারক নম্বর ৭৫ ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস আশাশুনি স্মারক নম্বর উমাশিঅ ২০২৫ পাবলিক ২৪, তারিখ: ৯-২-২০২৫। এসবের তোয়াক্কা না করে গত ২৪ শে ফেব্রুয়ারি উপজেলা ৪৬ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় নিষিদ্ধ পাঞ্জেরী গাইড ও পাঠ্যসূচি তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। ৪৬ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রত্যেক স্কুলে নিষিদ্ধ পাঞ্জেরী গাইড ও সে অনুযায়ী পাঠ্যসূচি পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। প্রত্যেক প্রধান শিক্ষকের মার্কার কলম দিয়ে পাঞ্জেরী গাইড কেনার জন্য হোয়াইট বোর্ডে লিখে দেয়ার কথা বলা হয়েছে। আর এ কাজটি করেছে আশাশুনি উপজেলার মাধ্যমে শিক্ষক সমিতির সভাপতি কুন্দুরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক মোঃ আরিফুল ইসলাম।
এ বিষয়ে আশাশুনি উপজেলার কাদাকাটি গ্রামের মোঃ তুহিনউল্লাহ তুহিন আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়,  আশাশুনি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি জনাব মোঃ আরিফুল ইসলামের নেতৃত্বে কিছু শিক্ষকদের নিয়ে গোপনে মিটিং করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার আদেশকে অমান্য করে পাঞ্জেরীর বই পাঠ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য প্রত্যেক প্রতিষ্ঠান প্রধানকে বিভিন্ন ভাবে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। উক্ত গোপন মিটিং-এ উপস্থিত ছিলেন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আশাশুনি উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান স্বামী শিক্ষক সমিতির সভাপতি আরিফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক সুশান্ত কুমার মন্ডল, প্রধান শিক্ষক গোয়ালডাঙ্গা ফকির বাড়ী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, অরুন কুমার গাইন, প্রধান শিক্ষক বদরতলা জে.সি. মাধ্যমিক বিদ্যালয়, প্রধান শিক্ষক বাবু পরিমল কুমার দাশ, গাবতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, প্রধান শিক্ষক বাবু শুকুমার, হাড়ীভাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, দুখিরাম ঢালী,প্রধান শিক্ষক কোদান্ডা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কোষাধক্ষ্য সুপদ সানা গত ২২-০২-২০২৫  তারিখে গোপন মিটিং করে ২৬-০২-২০২৫ ইং তারিখ বিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যাবে বিধায় এই মর্মে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ২৩-২৫ তারিখের মধ্যে প্রত্যেক স্কুলে সৌজন্য বই ও বুকলিস্ট পাঠানোর জন্য পাঞ্জেরী কোম্পানি প্রতিনিধিদের নির্দেশ দেন। প্রত্যেক স্কুল মোবাইল ফোনে মনিটারিং করার দায়িত্ব দেওয়া হয় পরিমল কুমার দাশ, অরুন কুমার। গাইন ও সুখিরাম ঢালীকে। তাদের এই ঔদত্যপূর্ণ আচারন দেখে উপজেলা শিক্ষক গন অত্যন্ত বিঘিœত হন। তারই  পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষক সমিতির প্রধান উপদেষ্টা জনাব গোলাম কিবরিয়া গত ২৫-০২-২০২৫ ইং তারিখে এক পত্রের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও অফিসের পত্রের কপি সকল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পৌছে দেন।
উক্ত পত্র পাওয়ার পর আরিফুল ইসলাম ক্ষিপ্ত হয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে অপমানজনক কথাবার্তা বলেন ও পুনরায় ০৫-০৩-২০২৫ ইং তারিখ সভাপতি শিক্ষক সমিতির হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে খুদেবার্তা পাঠান যা আপনার আদেশের পরিপন্থী। উক্ত খুদে বার্তা দেখে আশাশুনি উপজেলার শিক্ষক, সচেতন অবিভাবক ও সুশিল সমাজ এই আচারনে নিন্দা জ্ঞাপন করেন।নাাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন অবিভাবক বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে হলে আশাশুনি উপজেলায় বই মালিক সমিতির সভাপতি/সম্পাদ কে পাঞ্জেরীরর বই নিষিদ্ধ মর্মে পত্র দিয়ে জানিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন । সাধারণ শিক্ষক মন্ডলী ও বিভিন্ন প্রধান শিক্ষকগনের অনিচ্ছা সত্ত্বেও পাঞ্জেরীরর সৌজন্য বই গুলো ও বুকলিস্ট গ্রহন করতে বাধ্য করা হয়েছে। এমতাবস্থায় এ সকল দুর্নীতিবাজ আইন অমান্যকারী শিক্ষক নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করার জোর দাবি জানায়। ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় শিক্ষক সমিতির কোন নিয়ম সঠিক ভাবে পালন না করে অনিয়মের আকড়াঁয় পরিণত করে রাখছে এই আরিফুল ইসলাম।
এ বিষয়ে আশাশুনি শিক্ষক সমিতির সভাপতি কুন্দুড়িয়া পি.এন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আরিফুল ইসলাম কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি শিক্ষক সমিতির সভাপতি এমন কাজ করিনি আর টাকা লেনদেনের কথা সপূন্ন মিথ্যা ও ইউএনও স্যার প্রজ্ঞাপন করার পর থেকে নিষেধ করে দিয়েছি।
অভিযোগের বিষয়ে আশাশুনি উপজেলা শিক্ষা অফিসার আতিয়ার রহমান জানান, আমরা প্রত্যেক স্কুলে নিষেধ করে দিয়েছি কিন্তুুু স্কুল ছুটি থাকার কারণে ভিজিড করতে পারছি না।
এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মুহাঃ আবুল খায়ের জানান, স্কুলে গাইড বই নিষিদ্ধ আর কেহ যদি প্রমাণ সহ অভিযোগ করে তাহলে তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button